লোড করা হচ্ছে ...

খুতবার বিষয়: কিয়ামতের দিন মীযানে যেসব আমল অত্যন্ত ভারী হবে

কিয়ামতের দিন মীযানে যেসব আমল অত্যন্ত ভারী হবে


কুরআনের দলিল
৪ : ৪০ নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রাপ্য হক বিন্দু-বিসর্গও রাখেন না; আর যদি তা সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন।
৯৯ : ৭ অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে
৯৯ : ৮ এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।


হাদিস দলিল

২৬৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত দিবসে আমার উম্মতের একজনকে সমস্ত সৃষ্টির সামনে আলাদা করে এনে উপস্থিত করবেন। তিনি তার সামনে নিরানব্বইটি আমলনামার খাতা খুলে ধরবেন। প্রতিটি খাতা দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। তারপর তিনি প্রশ্ন করবেন, তুমি কি এগুলো হতে কোন একটি (গুনাহ) অস্বীকার করতে পার? আমার লেখক ফেরেশতারা কি তোমার উপর যুলুম করেছে? সে বলবে, না, হে প্ৰভু!

তিনি আবার প্রশ্ন করবেনঃ তোমার কোন অভিযোগ আছে কি? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! তিনি বলবেনঃ আমার নিকট তোমার একটি সাওয়াব আছে। আজ তোমার উপর এতটুকু যুলুমও করা হবে না। তখন ছোট একটি কাগজের টুকরা বের করা হবে। তাতে লিখা থাকবেঃ “আমি সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল"।

তিনি তাকে বলবেনঃ দাড়িপাল্লার সামনে যাও। সে বলবে, হে প্ৰভু! এতগুলো খাতার বিপরীতে এই সামান্য কাগজটুকুর কি আর ওজন হবে? তিনি বলবেনঃ তোমার উপর কোন রকম যুলুম করা হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর খাতাগুলো এক পাল্লায় রাখা হবে এবং উক্ত টুকরাটি আরেক পাল্লায় রাখা হবে। ওজনে খাতাগুলোর পাল্লা হালকা হবে এবং কাগজের টুকরার পাল্লা ভারী হবে। আর আল্লাহ তা'আলার নামের বিপরীতে কোন কিছুই ভারী হতে পারে না।

সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪৩০০)

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। কুতাইবা-ইবনু লাহীআ হতে, তিনি আমির ইবনু ইয়াহইয়া (রাহঃ) হতে এই সনদে উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণিত আছে। বিতাকা অর্থ টুকরা বা খণ্ড।

হাদিস গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] | হাদিসের মানঃ সহিহ

৩৪৬৭। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন দুটি বাক্য আছে যা মুখে উচ্চারণ করা অতি সহজ, ওজনে খুবই ভারী এবং করুণাময় আল্লাহ তা'আলার নিকট অতি প্রিয়ঃ “সুবৃহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আমীম” (মহা পবিত্র আল্লাহ তা'আলা, তিনি মহামহিম, মহা পবিত্র আল্লাহ তা'আলা, সকল প্রশংসা তার জন্য)।

সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।

আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।

হাদিস গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] | হাদিসের মানঃ সহিহ

৪৯৮১. হাফ্‌স ইবন উমার (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ্‌ ইবন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু'টি বিষয় এমন, যদি কোন মুসলিম সব সময় তা হিফায়ত করে, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ দু'টি ব্যাপার (কাজ) খুবই সহজ, কিন্তু এর উপর আমলকারীর সংখ্যা খুবই কম! তা হলোঃ প্রত্যেক সালাতের পর ১০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০ বার আলহামদুলিল্লাহ, এবং ১০ বার আল্লাহু আকবর পাঠ করা। যা সারা দিনে মোট ১৫০ বার হয়ে থাকে মুখে পাঠ করাতে। আর কিয়ামতের দিন এর ছাওয়াব মীযানে ১,৫০০ বার পাঠের সম-পরিমাণ হবে।

(তিনি আরো বলেনঃ) আর শয়নকালে আল্লাহু-আকবর- ৩৪ বার, আল- হামদুলিল্লাহ-৩৩ বার এবং সুবহানাল্লাহ- ৩৩ বার মুখে ১০০ বার পাঠ করার বিনিময়, কিয়ামতের দিন মীযানে ১০০০ বার পাঠের ছাওয়াবের অনুরূপ হবে।

রাবী আবদুল্লাহ্‌ ইবন আমর (রাঃ) বলেনঃ আমি দেখেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তাসবীহ তাঁর হাতের আংগুলে আদায় করতেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ দু'টি কাজ তো সহজ, কিন্তু এর আমলকারীর সংখ্যা কম কেন হবে? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ শয়নকালে শয়তান তোমাদের কাছে আসে এবং তা পাঠের আগেই সে তোমাদের তদ্রাচ্ছন্ন করে দেয়। আর সালাত আদায়কালে সে নামাযীর কাছে উপস্থিত হয়ে ঐ তাসবীহগুলো পাঠের আগেই তাকে কোন কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (যার ফলে সে আর তা পাঠ করতে পারে না।)

হাদিস গ্রন্থঃ সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ) | হাদিসের মানঃ সহিহ

১১৭৭। মুসলিম (রহঃ) ... আবূ সায়ীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মহিলাগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরয করলেন, আমাদের জন্য একটি দিন নির্ধারিত করে দিন। তারপর তিনি একদিন তাদের ওয়ায-নসীহত করলেন এবং বললেনঃ যে স্ত্রীলোকের তিনটি সন্তান মারা যায়, তারা তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে। তখন এক মহিলা প্রশ্ন করলেন, দু' সন্তান মারা গেলে? তিনি বললেন, দু' সন্তান মারা গেলেও।

শরীক (রহঃ) ... আবূ সায়ীদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, যারা বালিগ হয়নি।

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) | হাদিসের মানঃ সহিহ

৪৭৯৯। আবূ দারদা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মীযানের পাল্লায় সচ্চরিত্রের চেয়ে অধিক ভারী আর কিছুই নেই।[1]

সহীহ।

হাদিস গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) | হাদিসের মানঃ সহিহ

১৩২৫. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃতের জন্য সালাত আদায় করা পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কীরাত, আর যে ব্যক্তি মৃতের দাফন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে তার জন্য দু’ কীরাত। জিজ্ঞেস করা হল দু’ কীরাত কী? তিনি বললেন, দু’টি বিশাল পর্বত সমতুল্য (সাওয়াব)। (৪৭, মুসলিম ১১/১৭, হাঃ ৯৪৫, আহমাদ ৯২১৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৪৫)

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) | হাদিসের মানঃ সহিহ