৪৫৮১. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে একদল লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। গ্রীষ্মের মেঘমুক্ত দুপুরের প্রখর কিরণবিশিষ্ট সূর্য দেখতে তোমরা কি পরস্পর ভিড় করে থাক? তারা বলল, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পূর্ণিমার রাতে মেঘমুক্ত আলো বিশিষ্ট চন্দ্র দেখতে তোমরা কি ভিড় কর? আবার তারা বলল, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এদের কোনটিকে দেখতে যেমন পরস্পর ভিড় কর না; কিয়ামতের দিনও আল্লাহকে দেখতেও তোমরা পরস্পর ভিড় করবে না। ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) যখন আসবে তখন এক ঘোষণাকারী ঘোষণা দেবে।
তখন প্রত্যেকেই আপন আপন উপাস্যের অনুসরণ করবে। আল্লাহ ব্যতীত প্রতিমা ও পাথর ইত্যাদির যারা পূজা করেছে, তারা সকলে জাহান্নামে গিয়ে পড়বে, একজনও বাকী থাকবে না। পুণ্যবান হোক অথবা পাপী, এরা এবং আল্লাহর অবশিষ্ট বিশ্বাসীরা ব্যতীত যখন আর কেউ থাকবে না, তখন ইয়াহূদীদেরকে ডেকে বলা হবে, তোমরা কার ‘ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযাইয়ের ‘ইবাদাত করতাম। তাদেরকে বলা হবে যে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহ স্ত্রীও গ্রহণ করেননি, পুত্রও গ্রহণ করেননি। তোমরা কী চাও? তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তৃষ্ণার্ত, আমাদেরকে পানি পান করান। এরপর তাদেরকে ইশারা করা হবে যে, তোমরা পানির ধারে যাও না কেন?
এরপর তাদেরকে জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে তা যেন মরুভূমির মরীচিকা, এক এক অংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে ফেলছে। অতঃপর তারা সবাই জাহান্নামে পতিত হবে। তারপর নাসারাদেরকে ডাকা হবে। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কার ‘ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র মসীহের ‘ইবাদাত করতাম। তাদের বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহ স্ত্রীও গ্রহণ করেননি, পুত্রও নয়। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কী চাও? তারাও প্রথম পক্ষের মতো বলবে এবং তাদের মতো জাহান্নামে নিপতিত হবে। অবশেষে পুণ্যবান হোক কিংবা পাপী হোক আল্লাহর উপাসনাকারী ব্যতীত আর কেউ যখন বাকি থাকবে না, তখন তাদের কাছে পরিচিত রূপের নিকটতম একটি রূপ নিয়ে রাববুল আলামীন তাদের কাছে আবির্ভূত হবেন। এরপর বলা হবে, প্রত্যেক দল নিজ নিজ উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে।
তোমরা কিসের অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, দুনিয়াতে এ সকল লোকের প্রতি আমাদের অনেক প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও আমরা সেখানে তাদের থেকে আলাদা থেকেছি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখিনি। এখন আমরা আমাদের প্রতিপালকের অপেক্ষায় আছি, আমরা তাঁর ‘ইবাদাত করতাম। এরপর তিনি বলবেন, আমিই তোমাদের প্রতিপালক। তারা বলবে, আমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করব না। এ কথাটি দু’বার কি তিনবার বলবে। [২২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪২২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪২২৩)