২৪৩৮। ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহর নিকট যে কোনো দিনের সৎ আমলে চেয়ে যিলহজ (হজ্জ) মাসের দশ প্রথম দিনের আমলের অধিক প্রিয়। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদও নয়? তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি তার জান-মাল নিয়ে জিহাদে বের হয় এবং কোনো একটি নিয়েও ফিরে না আসে তার কথা স্বতন্ত্র।[1]
সহীহ।
২৪৫৭। উবাই ইবনু কাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাতের দুই-তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে দাড়িয়ে বলতেনঃ হে মানবগণ! তোমরা আল্লাহ্ তা'আলাকে স্মরণ কর, তোমরা আল্লাহ্ তা'আলাকে স্মরণ কর। কম্পন সৃষ্টিকারী প্রথম শিঙ্গাধ্বনি এসে পড়েছে এবং এর পরপর আসবে পরবর্তী শিঙ্গাধ্বনি। মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরূদ পাঠ করি। আপনার প্রতি দরূদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে তোমারই মঙ্গল হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরূদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ চাও, যদি এর চেয়েও বাড়াতে পারো সেটা তোমার জন্যই কল্যাণকর।
আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময় দরূদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে তোমারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই আপনার উপর দরূদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি বললেনঃ তাহলে তোমার চিন্তা ও কষ্টের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।
হাসানঃ সহীহাহ (৯৫৪), ফাযলুস সালাত আলান্নবী (১৩, ১৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
৪০৫. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে (দেয়ালে) ‘কফ’ দেখলেন। এটা তাঁর নিকট কষ্টদায়ক মনে হলো। এমনকি তাঁর চেহারায় তা ফুটে উঠলো। তিনি উঠে গিয়ে তা হাত দিয়ে পরিষ্কার করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তার রবের সাথে একান্তে কথা বলে। অথবা বলেছেন, তার ও ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর মাঝখানে তার রব আছেন। কাজেই, তোমাদের কেউ যেন ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে থুথু না ফেলে। বরং সে যেন তার বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে তা ফেলে। অতঃপর চাদরের আঁচল নিয়ে তাতে তিনি থুথু ফেললেন এবং তার এক অংশকে অন্য অংশের উপর ভাঁজ করলেন এবং বললেনঃ অথবা সে এমন করবে। (২৪১; মুসলিম ৫/১৩, হাঃ ৫৫১, আহমাদ ১২৮০৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৬)
وَقَالَ سَهْلٌ الْتَفَتَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَرَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
সাহল (রহ.) বলেছেন, আবূ বাকর (রাযি.) তাকালেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখলেন।
৭৫৩. ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, এমতাবস্থায় মসজিদে কিব্লার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে তা পরিষ্কার করে ফেললেন। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করে বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন আল্লাহ্ তার সামনে থাকেন। কাজেই সালাতে থাকা অবস্থায় কেউ সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। মূসা ইবনু ‘উক্বাহ ও ইবনু আবূ রাওয়াদও (রহ.) নাফি‘ (রহ.) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭১৭)
২২৬৪-(৮৭/১০২৮) ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ তোমাদের মধ্যে কে রোযা রেখেছে? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে জানাযার সাথে গেছে? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে মিসকীনকে খাবার দিয়েছে? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে গেছে? আবূ বাকর (রাযিঃ) বললেন, আমি। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে এসব কাজের সমাবেশ ঘটে, সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২২৪৩, ইসলামীক সেন্টার ২২৪৪)
২৬৩৬-(১৯৬/১১৬২) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী ও কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহিমাহুমাল্লাহ) ...... আবূ কাতাদাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কিভাবে সওম পালন করেন? তার এ কথায় রসূলুল্লাহ অসন্তুষ্ট হলেন। উমর (রাযিঃ) তার অসন্তোষ লক্ষ্য করে বললেন, “আমরা আল্লাহর উপর (আমাদের) প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামের উপর (আমাদের) দীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর আমাদের নবী হিসেবে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আল্লাহর কাছে তার ও তার রসূলের অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।”
“উমর (রাযিঃ) কথাটি বার বার আওড়াতে থাকলেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসন্তোষের ভাব দূরীভূত হল। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যে ব্যক্তি সারা বছর সওম পালন করে তার অবস্থা কিরূপ? তিনি বললেন, সে সওম পালন করেনি এবং ছেড়েও দেয়নি। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, যে পর্যায়ক্রমে দু'দিন সওম পালন করে ও একদিন সওম ত্যাগ করে, তার অবস্থা কীরূপ? তিনি বললেন, এ সামর্থ্য কার আছে? (অর্থাৎ সামর্থ্য) থাকলে বেশ ভাল কথা। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, যে ব্যক্তি একদিন পর একদিন সওম পালন করে তার অবস্থা কিরূপ? তিনি বললেন, এটা দাউদ (আঃ) এর সওম। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, যে একদিন সওম পালন করে ও একদিন করে না, তার অবস্থা কিরূপ?
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি আশা করি যে, আমার এতটা শক্তি হোক। তিনি পুনরায় বললেন, প্রতি মাসে তিনদিন সওম পালন করা এবং রমাযান মাসের সওম এক রমাযান থেকে পরবর্তী রমাযান পর্যন্ত সারা বছর সওম পালনের সমান। আর আরাফাহ দিবসের সওম সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে। আর আশুরার সওম সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারাহ হয়ে যাবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২৬১৩, ইসলামীক সেন্টার ২৬১২)
১/৩১২৩। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে।