লোড করা হচ্ছে ...

খুতবার বিষয়: হারাম মাস

হারাম মাস


কুরআনের দলিল
২ : ১৯৭ হজ্জ্বে কয়েকটি মাস আছে সুবিদিত। এসব মাসে যে লোক হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার পক্ষে স্ত্রীও সাথে নিরাভরণ হওয়া জায়েজ নয়। না অশোভন কোন কাজ করা, না ঝাগড়া-বিবাদ করা হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, আল্লাহ তো জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আর আমাকে ভয় করতে থাক, হে বুদ্ধিমানগন! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই।
৯ : ৩৬ নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন।
৫ : ২ হে মুমিনগণ! হালাল মনে করো না আল্লাহর নিদর্শনসমূহ এবং সম্মানিত মাসসমূহকে এবং হরমে কুরবানীর জন্যে নির্দিষ্ট জন্তুকে এবং ঐসব জন্তুকে, যাদের গলায় কন্ঠাভরণ রয়েছে এবং ঐসব লোককে যারা সম্মানিত গৃহ অভিমুখে যাচ্ছে, যারা স্বীয় পালনকর্তার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে। যখন তোমরা এহরাম থেকে বের হয়ে আস, তখন শিকার কর। যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শুত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।
২ : ২১৭ সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্দ্বকতা সৃষ্টি করা এবং কুফরী করা, মসজিদে-হারামের পথে বাধা দেয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা, আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহা পাপ। বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়। তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বীন থেকে ফিরে দাঁড়াবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখবাসী। তাতে তারা চিরকাল বাস করবে।
২ : ১৭৩ তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
১৬ : ১১৫ অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা জবাই কালে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর কেউ সীমালঙ্ঘন কারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
৪ : ৮৯ তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।
৬০ : ২ তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও।
৩ : ১০২ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
২২ : ৩৬ এবং কা’বার জন্যে উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্যে আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্যে মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় তাদের যবেহ করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর। অতঃপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে তোমরা আহার কর এবং আহার করাও যে কিছু যাচ্ঞা করে না তাকে এবং যে যাচ্ঞা করে তাকে। এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
৩ : ৯২ কস্মিণকালেও কল্যাণ লাভ করতে পারবে না, যদি তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে তোমরা ব্যয় না কর। আর তোমরা যদি কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ তা জানেন।

হাদিস দলিল

১৫১২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (এখন আর কোন) ফারাআ নেই, আতীরাহও নেই।

সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩১৬৮), নাসা-ঈ

উট বা ছাগল-ভেড়ার প্রথম বাচ্চাকে ফারাআ বলে। আরব মুশরিকরা এটাকে তাদের দেব-দেবীর নামে উৎসর্গ করার উদ্দেশ্যে যবেহ করত।

নুবাইশা, মিখনাফ ইবনু সুলাইম ও আবিল উশারার পিতা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। রজাব মাস হারাম মাসগুলোর মধ্যে প্রথম মাস হওয়ার কারণে এর সম্মানার্থে আরব মুশরিকরা পশু যবেহ করত। এ উদ্দেশ্যে যবেহকৃত পশুকে আতীরাহ বলে।

হারাম মাসগুলো হচ্ছেঃ রজব, যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুহাররাম।

হাজ্জের মাসগুলো হচ্ছেঃ শাওয়াল, যিলকাদ ও যিলহজ্জের প্রথম দশদিন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কয়েকজন সাহাবী ও তৎপরবতীদের হতে হাজের মাসগুলি প্রসঙ্গে এমতই বর্ণিত আছে।

হাদিস গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] | হাদিসের মানঃ সহিহ

৪৬৬২. আবূ বাকর (রাঃ) কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বললেন, আল্লাহ যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করেন সেদিন যেভাবে যামানা ছিল তা আজও তেমনি আছে। বারমাসে এক বছর, তার মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুহার্রম আর মুযার গোত্রের রাজব যা জামাদিউসসানী ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী। [৬৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৩০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৩০২)

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) | হাদিসের মানঃ সহিহ

১২৪-(১১৬/৬৪) মুহাম্মাদ ইবনু বাককার ইবনু আর রাইয়্যান ও ‘আওন ইবনু সাল্লাম এবং মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না (রহঃ) ...'আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিমকে গালি দেয়া গুনাহের কাজ এবং তার সাথে মারামারি করা কুফুরী।

রাবী যুবায়দ বলেন, আমি (আমার উসতায) আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এ রিওয়ায়াত করতে শুনেছেন? তিনি (আবূ ওয়ায়িল) বললেন, হ্যাঁ। তবে রাবী শু'বার হাদীসে আবূ ওয়ায়িলের সাথে যুবায়রের উক্ত কথার উল্লেখ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৫, ইসলামিক সেন্টারঃ ১২৯)

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) | হাদিসের মানঃ সহিহ

১৮৪-(১৬৪/১০১) কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ এবং আবূল আহওয়াস মুহাম্মাদ ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়, আর যে ব্যক্তি আমাদের ধোকা দিবে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৫, ইসলামিক সেন্টারঃ ১৯১)

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) | হাদিসের মানঃ সহিহ

২২৩২-(৬৩/১০১৪) কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পবিত্র অর্থাৎ হালাল দ্বারা সদাকাহ দেয়- আর আল্লাহ পবিত্র বা হালাল মাল ছাড়া গ্রহণ করেন না- করুণাময় আল্লাহ তার সদাকাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন, যদিও তা একটি খেজুর হয়। অতঃপর এ সদাকাহ দয়াময় আল্লাহর হাতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। অবশেষে তা পাহাড়ের চেয়েও অনেক বড় হয়ে যাবে- যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বা উটের বাচ্চাকে লালন পালন করে এবং সে দিন দিন বড় হতে থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২২১১, ইসলামীক সেন্টার ২২১২)

হাদিস গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) | হাদিসের মানঃ সহিহ